জলই জীবন
জলই জীবন এই কথাটা শুধুমাত্র কথা নয়। এই ছোট্ট কথাটার পিছনে লুকিয়ে আছে একটা খুবই বড় মানে যাকে উন্মোচন করতে হবে মানুষের হৃদয় দ্বারা। এই মানে বা কথার অর্থটা বিশ্লেষণ করলে আমরা জানতে পারবো, যে জল আমাদের সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ও উৎস প্রাণের। সমগ্র জীব কুল হল একটি জল আশ্রিত প্রাণী। জল ছাড়া আমাদের জীবন অচল আমরা ছোটবেলার বা শৈশব থেকে জেনে থাকি পৃথিবীর জলের সৃষ্টি হয়েছিল তবে থেকেই পৃথিবীতে জলের উৎস বর্তমান। আমরা জেনে থাকি যে এই পৃথিবীতে মোট 100 ভাগের ৭০ ভাগ জল দ্বারা আবৃত ও বাকি ৩০ ভাগ ভূখণ্ড বা বাসস্থল। কিন্তু এটা শৈশবের তুলনায় সঠিক তথ্য মনে হলেও যৌবনকালে বা পরিণত বয়সে এই তথ্যটা সঠিক বলে আমি মনে করি না কারণ কারণ বর্তমান পৃথিবীতে সত্য শতাংশ জল থাকলেও এর ভাগও আছে প্রচুর। যদি এই সত্য শতাংশ কে আমরা ১০০ হিসেবে ধরি তাহলে এই ১০০ ভাগের 97 ভাগ জল সমুদ্রে অবস্থিত যা খুবই লবণাক্ত প্রকৃতি এই জল শুধুমাত্র হাতেগোনা কয়েকটা ব্যবসাতে ছাড়া আর কোন কাজে লাগে না। বাকি থাকলো আর এই 3 শতাংশের মধ্যে দুই শতাংশ শুধুমাত্র বড় ও হিমবাহ রূপে সঞ্চিত আছে আমাদের এই পৃথিবীতে। তাহলে আমাদের এটা মাথায় রাখতে হবে যে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যে জল ব্যবহার করে থাকি, সেই জলের পরিমাণ শুধুমাত্র 1 শতাংশ ওই 100 ভাগের থেকে। এই 1 শতাংশ জলকে যদি আমরা ১০০% ধরি তাহলে( ৫০ শতাংশ বাণিজ্যিক কাজে 30% আমাদের ফসল উৎপাদনের কাজে ও বাকি ২০) শতাংশ জল সাধারণ মানুষের পানযোগ্য ব্যবহারযোগ্য। আমাদের এই পৃথিবীর জনসংখ্যা বর্তমানে প্রায় 900 কোটি এবং তা বর্তমানে আরো বাড়বে এবং এই সমগ্র পৃথিবীর সমগ্র মনুষ্য জাতির এটা কর্তব্য যে তারা এই ২০ শতাংশ জলকে সঠিকভাবে ব্যবহার করুক অযথা জল নষ্ট না করে। একটা মানুষের স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন ও বেঁচে থাকার জন্য দিনে সারা( ৩.৭) লিটার জল পান করা দরকার। এছাড়া WHO মতে একটা মানুষের দৈনন্দিন ২৫ থেকে ৩০ লিটার জল খরচ করে সে নিজের দৈনন্দিন কাজ পালন করতে পারবে। জল হল প্রকৃতি থেকে পাওয়া আমাদের এক অমূল্য সম্পদ জীব বিজ্ঞানীরা এটিই মনে করেন জীবের প্রথম অস্তিত্ব শুরু হয়েছিল আমাদের এই জল থেকে। এই জল শুধু বর্তমান প্রকৃতিতেই নয় আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের হাতেও তুলে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাই জলের অযথা অপচয় আমাদের বন্ধ করতে হবে। পৃথিবীতে জলের অস্তিত্ব থাকার জন্য বর্তমান পৃথিবীতে আমাদের মানুষের অস্তিত্ব বিরাজমান। প্রকৃতির অর্থ বিশ্লেষণ করলে আমরা এটি জানতে পারবো যে প্রকৃতি হল "একটি পৃথিবীর সমস্ত প্রাণী গাছপালা এবং অন্য জিনিস বোঝায় যা মানুষের তৈরী করেনি"। অর্থাৎ এই অর্থে আমরা এটি জানতে পারলাম যে এই প্রকৃতিগত উপাদান গুলি উপর মানুষের কোন অধিকার নেই কিন্তু জীবেদের অধিকার আছে। এই অর্থে বর্তমানে সমগ্র জীবকুল ভবিষ্যতের সমগ্র জীবকুল এই এই জলের উপর অধিকার আছে কিন্তু মানুষ নিজের লোভ লালসা তার আশা-আকাঙ্ক্ষার বসে এই জলের অস্তিত্বকে যদি বর্তমানেই শেষ করে ফেলে তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই জল থেকে চিরতরে বঞ্চিত থাকবে। যা মানুষের মানবতার জায়গায় খুবই লজ্জাজনক। যদি মানুষ নিজের লোভ লালসা কে না শোধরায় তবে প্রকৃতি মানুষকে শুধরাতে বাধ্য করবে আর এই বাধ্য করাটা খুবই খারাপ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রকৃতি নির্বাহ করবে। এর প্রত্যক্ষ উদাহরণ হচ্ছে আমাদের ২০২০ তে আশা মহামারী কোভিড নাইনটি অতীতে ঘটে যাওয়া প্লীজ কালা জ্বর ইত্যাদি যা প্রকৃতিতে বিরাজমান ও প্রকৃতির ধারায় উৎপন্ন হয়েছে। বর্তমানে কিছু কিছু দেশের অবস্থা এত সূচনীয় হয়ে পড়েছে যে সেখানে পান করা জল খুবই কষ্টে পাওয়া যায় পানীয় জলের অভাবে কিছু দেশ অন্য দেশের অধীনে নিজেদের জীবন যাপন করছে। যদি আমরা এখনও না শোধরায় তাহলে আমাদের দেশের অবস্থাটাও ঠিক এমনই হবে এমন পুরো মানব কুল ধ্বংসের পথে যাবে। বর্তমানে আমাদের দেশের জলের কষ্ট না থাকলেও আমরা যদি এই অমূল্য সম্পদকে সঠিক নিয়মে ব্যবহার না করতে পারি তবে অতীত থেকে বর্তমান প্রজন্ম এই জলটিকে পেয়েছে কিন্তু ভবিষ্যত প্রজন্ম অর্থাৎ আপনাদের( নাতি নাতনিরা) এই জলটি নাও পেতে পারে। জলের সঠিক ব্যবহার করুক ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সুখে বাঁচুন। সবশেষে এটাই বলব মানুষ যদি না শোধরায় তবে সে পস্তাবে। এবার কিছু ভালো মানুষও আছে যারা এই বিষয়টাকে খুব গভীরভাবে বোঝে তাদের উদ্দেশ্যে জল সংরক্ষণের কিছু উপায় ও নিয়ম নিম্ন আলোচনা করা হলো।
1) বাড়িতে কোন নির্মাণ করতে হবে যাতে বৃষ্টির জল সেই কুয়োদে সংরক্ষণ করে তুমি দীর্ঘদিন ধরে সেই জলের ব্যবহার করতে পারো যাতে তোমার যে ভূগর্ভস্থ জল বা ভৌম জল তার ব্যবহার তুমি কমিয়ে আনতে পারো।
2) বেশি পরিমাণে গাছ পুড়তে হবে যাতে বৃষ্টির চক্র ঠিক থাকে, গাছের মাধ্যমে যে সালোকসংশ্লেষ হয় সেই সালোকসংশ্লেষের মাধ্যমেও কিন্তু বৃষ্টির সাইকেল যেটা আমাদের পরিবেশে বৃষ্টি হওয়াতে সাহায্য করে সেটা বিরাজমান থাকবে।
3) প্রতিদিন "WHO" এর মতে যেটা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংগঠন তাদের নিয়মে জল ব্যয় করতে হবে।
4) অযোধ্যা কল খোলা রাখবেন না কারণ এক ঘন্টা টাইম কল খোলা রাখলে তার থেকে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ লিটার জল অপচয় হয়।
৫) টিউবওয়েলের ব্যবহার যতটা সম্ভব আমাদের কম করতে হবে কারণ এর জন্য মাটির নিচে জলের যে আর্সেনিক সে আর্সেনিক দূষণের কারণে জল দূষিত হয়ে পড়ছে ফলে এই জল যখন আমরা পান করব তখন আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ দেখা দেবে এছাড়া আমাদের পুকুরের ব্যবহার বেশি করতে হবে পুকুর ভরাট করলে হবে না জল সংরক্ষণের একটি বড় মাধ্যম।
আমাদেরকে এই বিষয়টা হালকা ভাবে নিলে চলবে না এই বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও খুবই গভীর বিষয় এর দ্বারা আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হবে।